রাজশাহী ব্যুরোঃ সরকারের নির্দেশনা কোন মতেই মানছে না রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালাহাট শাখা সোনালী ব্যাংক। এখানে কৃষি, ক্ষুদ্র্র, খামার ও ব্যবসায়ী ঋণ জোর করে গ্রাহকের কাছে থেকে আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও এ শাখায় প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারীদের ভোগ্যপণ্য ঋণের কিস্তির টাকা মার্চ মাসের বেতন একাউন্ট থেকে কেটে নেয়াও হয়েছে। সর্বশেষ গত (২৮ এপ্রিল) মঙ্গলবার বয়স্ক ভাতার টাকা উত্তোলন করতে এসেছিলেন এক বৃদ্ধ। কিন্তু তার লোনের কিস্তির টাকাও জোরপূর্বক কেটে নেন ব্যাংক ম্যানেজার মিঠুন কুমার দেব।
করোনা প্রভাবে নাজেহাল পুরো দেশ। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। আয় রোজগার না থাকায় সরকারে সাহেয্যের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে বেসরকারী এনজিও তাদের কিস্তি আদায় বন্ধ রেখে বেশ মানবতায় পরিচয় দিয়েছেন।কিন্ত সরকারী মালিকানাধীন মুন্ডুমালা হাট শাখা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার অমানবিক আচরণ করে তিনি ধৃষ্টার পরিচয় দিয়েছেন। এমন দুর্যোগ মুহুর্তেও কিস্তির টাকা এক প্রকার জোর করে আদায় করছেন। এতে ঋণ গ্রহীতা ও গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বয়স্ক ভাতাভোগী এক বৃদ্ধ জানান, সোনালী ব্যাংকে গত কয়েক বছর আগে ২০ হাজার টাকা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ছিলেন তিনি। প্রতিমাসে সাধ্যমত তিনি কিস্তির টাকা জমা দিয়ে আসছেন। চলতি মাসেও তিনি এক হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছেন।
গত (২৮ এপ্রিল) মঙ্গলবার বয়স্ক ভাতার টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংকে আসছিলেন ওই বৃদ্ধ। তিনি মুন্ডুমালা পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। যার হিসাব নং- ১১১০২ ও বই নম্বর ৬৮৫৪। ছয় মাসের বয়স্ক ভাতা ৩ হাজার টাকা পাবেন তিনি। কিন্তু ব্যাংক ম্যানেজার তার ভাতার পুরো টাকা কিস্তি দরুণ কেটে নেন। পরে অনুরোধে দেড় হাজার টাকা ফেরত দেন। বাঁকি টাকা ফেরত দেননি।
ওই বৃদ্ধ ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও জানান, করোনার জন্য আয় রোজগার কমে গিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি একযোগে ৬ মাসের বয়স্ক ভাতা ৩ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। এমন খবরে খুশিতে প্রাণটা ভরে গেল। কিন্তু ম্যানেজার আমার বয়স্ক ভাতার টাকা লোনের কিস্তি দিতে কেটে নিলেন। অনেক মিনতি করেও ম্যানেজার পুরো টাকা দেননি।এছাড়াও উপজেলার পাঁচন্দর দাখিল মাদরাসার অফিস সহকারী হারুন অর রশিদ বলেন, তার মার্চ মাসের বেতন ব্যাংকে জমা হওয়া মাত্র ভোগ্যপণ্য ঋণের কিস্তি কেটে নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকে এ মাসে কিস্তি না কাটার জন্য অনুরোধ করা হলেও তারা কোন অনুরোধ রাখেন নি।
কিন্ত সরকারী মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক তাদের সাথে আচরণ করছেন অন্য রকম। গত মার্চ মাসের বেতন আসা মাত্র প্রায় ৪০০ বেশি শিক্ষক,কর্মচারীর ভোগ্যপণ্য ঋণের কিস্তি জোরপূর্বক একাউন্ট থেকে কেটে নেন। এতে শিক্ষক,কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।এনিয়ে ব্যাংক ম্যানেজার মিঠুন কুমার দেব বলেন, নিয়ম মেনেই কিস্তি আদায় করা হচ্ছে। করোনার কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা স্বরণ করে দেয়া হলেও ম্যানেজার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দিয়েছেন সেটা দিতে পারেন। কিন্তু আমরা অফিসিয়াল কোন নির্দেশনা পাইনি বলে কিস্তি আদায় করা হচ্ছে।